“স্কাউট জীবের প্রতি সদয়।” স্কাউট আন্দোলনের ৪র্থ আইনকে সামনে রেখে ক্রিস্টাল ওপেন স্কাউটস গ্রুপ-এর পরিচালনায় গত ১১ মে, ২০২১ তারিখে অনুষ্ঠিত হলো “মালিকবিহীন প্রাণী ও পোষাপ্রাণী’র যত্ন নেওয়া বিষয়ক কর্মশালা: নিউ প’-সিবিলিটিস”।
বিশ্ব ব্যাপী চলমান করোনা মহামারীতে বর্তমানে আমরা দ্বিতীয়বারের মত বাসায় অবস্থান করছি। সমাজে বসবাসের ফলে মানুষে-মানুষে যেমন স্নেহ-প্রীতির সম্পর্ক গড়ে ওঠে, তেমনি অন্য জীবের সঙ্গেও মানুষের মমত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। হৃদয়ের সেই মমত্ববোধ থেকেই মানুষ আদিম কাল থেকেই বিভিন্ন গৃহপালিত জীব, প্রাণী-পাখি ইত্যাদি পুষে থাকে। প্রতিটি মানুষের প্রতি আমাদের যেমন দায়িত্ব রয়েছে একই সাথে আমাদের আশেপাশের মালিকবিহীন প্রাণী ও পোষাপ্রাণীদের প্রতি রয়েছে বিশেষ দায়িত্ব। এসব প্রাণীদের যত্ন, খাদ্যাভাস, ভেক্সিনেশন, চিকিৎসা ইত্যাদি বিষয়কে কেন্দ্র করে উক্ত কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব সরোয়ার মোহাম্মদ শাহরিয়ার, প্রতিষ্ঠাতা, ক্রিস্টাল ওপেন স্কাউটস এবং জাতীয় কমিশনার, স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং এন্ড গ্রোথ, বাংলাদেশ স্কাউটস। অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডা. নিশাত তানজিন অরা এবং ওয়াহিদ বিপ্লব।

উক্ত কর্মশালায় দেশজুড়ে বিভিন্ন জেলা থেকে অংশগ্রহণ করেন কাব স্কাউট, স্কাউট, রোভার স্কাউট, এডাল্ট লিডার সহ নন-স্কাউট ব্যক্তিত্ব। সুন্দর পৃথিবী গড়তে প্রতিটি প্রাণীর ভারসাম্য রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। কর্মশালার প্রধান অতিথি এ বিষয়ে বলেন, “পোষা প্রাণীদের সাথে আমাদের সম্পর্ক একই পরিবারের ন্যায়। মানুষের সাথে প্রাণীদের সম্পর্ক অপরিসীম। তাই আমাদের প্রয়োজন, তাদের সঠিক খাদ্যাভাস ও অসুস্থতা সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং যত্ন নেওয়া।” অতিথি বক্তা ডা. নিশাত তানজিন অরা এবং ওয়াহিদ বিপ্লব মালিকবিহীন ও পোষাপ্রাণী’র যত্ন নিতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ, সতর্কতা, প্রচলিত বিভ্রান্তি এবং বিভিন্ন অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আলোচনা করেন।
অংশগ্রহণকারীরা তাদের গৃহপালিত পোষা প্রাণীদের পরিচয় একে অন্যের কাছে তুলে ধরেন। অংশগ্রহণকারীদের মতামত সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, “এ ধরনের কর্মশালা আমাদের জন্য খুবই উপকারী এবং গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতে এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আমাদের অনুরোধ থাকবে। প্রতিটি প্রাণীর বেচেঁ থাকার জন্য আমরা যতটুকু গুরুত্বপূর্ণ একইভাবে আমাদের বেচেঁ থাকার উপর প্রাণীদের গুরুত্বও অনুরূপ।”
প্রতিটি ধর্মেই প্রাণী সংরক্ষণকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। প্রাণী সুরক্ষায় বিশ্বের সব নাগরিককে সোচ্চার আর সচেতন হতে হবে। নতুন প্রজন্মকে প্রাণী ও পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে ভবিষ্যৎ পৃথিবী হবে নিরাপদ। স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা লর্ড ব্যাডেন পাওয়েল বলেছেন, “প্রতিটি স্কাউট হলো প্রাণীর সেরা বন্ধু।” ভবিষ্যতে এমন কার্যক্রম আবারও নিয়ে আসার জন্য ক্রিস্টাল ওপেন স্কাউটস গ্রুপ আশা রাখছে।
– শাহাদাত হোসেন রাহাত, সহকারী রোভার মেট, ক্রিস্টাল ওপেন স্কাউটস
সূত্র : ত্রৈমাসিক ঢাকা জেলা রোভার পত্রিকা। বর্ষ – ২১, সংখ্যা – ০২ রেজিঃ নং – ২০০১-৬৮